যখন কোন সুস্থ শিশু অকারণে, যেমন অসুস্থ লাগা, খিদে লাগা, ভিজে ভাব, গরম বা ঠাণ্ডা লাগা ছাড়াই অস্বাভাবিক কান্না করতে থাকে তখন এধরনের শিশুদের বিশেষজ্ঞরা কলিক বেবি বলে থাকেন।

সাধারণত, সন্ধ্যা থেকে শুরু করে রাত গভীর হতে থাকলে শিশুর কান্নার তীব্রতা বাড়তে থাকে। “কলিক” শিশুরা সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে তাদের ইন্দ্রিয়ের এর উপর চাপ সহ্য করতে পারেনা। ফলে তারা বিরক্ত হয়ে উঠে এবং কান্না জুড়ে দেয়। তবে শিশু ৩-৪ মাসের মধ্যে নিজেই এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারে।

শিশু কান্না করলেই তাকে বোতল বা গুড়া দুধ খেতে দেওয়া উচিৎ নয়। এতে শিশু বোতলে দুধ খাওয়ার দিকে আগ্রহ দেখায় এবং মায়ের দুধ খাওয়া বন্ধ করে দিতে পারে। বরং, আপনার শিশু ঠিক কি কারণে অস্বস্তি বোধ করছে তা বোঝার চেষ্টা করুন।

নিচের নির্দেশনাগুলো শিশুকে কিছুটা শান্ত করতে পারবে, কিন্তু খেয়াল রাখবেন সবগুলো উপায় এক এক করে চেষ্টা করুন। সবগুলো একসাথে করবেন না। এতে শিশু আরও বিরক্ত হয়ে আরও বেশি কান্না জুড়ে দিতে পারে।

কলিক শিশুকে শান্ত করার কিছু পরামর্শঃ

১. শিশু কান্না শুরু করলেই সাড়া দিন।

২. বিরক্তবোধ করে এমন বিষয়গুলো এড়িয়ে চলুন, যেমন-শিশুর সামনে ধূমপান করবেন না।

৩. শান্ত পরিবেশ বজায় রাখুন। যথাসম্ভব মৃদু স্বরে কথা বলুন।

৪. শিশুকে উদ্দেশ্য করে ইতিবাচক/প্রশংসাসূচক মন্তব্য করুন।

৫. শিশুর পেটে সামান্য চাপ দিলে আরাম অনুভব করে। শিশুকে আপনার কোলে উপুড় করে শুইয়ে/সোজা করে কোলে নিয়ে যাতে শিশুর পেট আপনার কাঁধের উপর থাকে/আপনার হাতের উপর উপুড় করে শুইয়ে আস্তে আস্তে তার পিঠে ঘষে বা চাপড়ে দিতে পারেন। এতে সে কিছুটা আরাম বোধ করবে।

৬. সঠিক অবস্থান ও সংস্থাপন মেনে মায়ের দুধ খাওয়ালে সমস্যা অনেকাংশে এড়িয়ে চলা সম্ভব। অবস্থান ও সংস্থাপন সঠিক না হলে শিশুর পেটে বাতাস ঢুকে যায়। ফলে শিশু অস্বস্তি বোধ করতে থাকে। এমনকি সঠিক পদ্ধতিতে না খাওয়ালে শিশু পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ পায় না। খাওয়ার পরে প্রত্যেকবার পেটের বাতাস বের করাতেও ভুলবেন না।

৭. মাঝে মাঝে শিশুকে নিয়ে ঘরের বাইরে ঘুরে আসতে পারেন। বাইরের পরিবেশ শিশুর মন শান্ত করতে পারে এবং শিশু সমাজিক হতে শেখে।

মায়েদের জন্য শিশুর সার্বক্ষণিক পরিচর্যা বেশ ক্লান্তিকর হয়ে যায় অনেক সময়, তাই যথাসম্ভব পরিবারের অন্যদের সাহায্যে এগিয়ে আসা জরুরি। মাকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে প্রাণবন্ত থাকতে উৎসাহিত করুন।