ডাঃ রাহনুমা পারভীন। 

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ। 

মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

প্রতিদিন প্রচুর ডেঙ্গু রোগী দেখছি। তারই আলোকে কিছু অবজাভেশন তুলে ধরছি।

১. আমরা যেন রোগী জ্বর হওয়ার ১-৪ দিনের মধ্যে আসলে শুধু NS1 Ag করি। ডেঙ্গু এন্টিবডি করতে না দেই। ৫ম দিন থেকে আর NS1 না করি।

২. প্রতিদিনের ফলো আপে কখনোই শুধু প্লাটিলেট দেখবো না। প্রতিদিন অন্তত একবার করে সিবিসি করতে দিব।

৩. কতটুকু ফ্লুইড দিতে হবে তা রোগীর ব্লাড প্রেশার, হেমাটোক্রিট ও জেনারেল কন্ডিশন দেখে সিদ্ধান্ত নিব।

৪. জ্বর কমার ৪৮ ঘন্টা পর থেকে অযথা অতিরিক্ত ফ্লুইড দিয়ে রোগীকে ফ্লুইড ওভারলোডে ফেলবো না। রোগীর বিপি, হেমাটোক্রিট, ইফিউশন, এসাইটিস এগুলো বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিবো। রোগীর হেমাটোক্রিট এর হ্রাস-বৃদ্ধি সতর্কতার সাথে মনিটর করবো।

৫. সাত দিনের বেশি হয়ে গেলে, জ্বর থাকলে ও NS1 করা না থাকলে এন্টিবডি করে ডেঙ্গু এক্সক্লুড করে নিবো।

৬. আমাদের হাসপাতালে ৭০০০-১৬০০০ প্লাটিলেট কাউন্ট নিয়েও বেশ কিছু রোগী কোন প্রকার ব্লাড বা প্লাটিলেট না নিয়েই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তাই অনুগ্রহ করে ব্লাড ও প্লাটিলেট দেয়ার পূর্বে ন্যাশনাল গাইডলাইন ফলো করবো। প্রতিদিন ফলোআপ এ ব্লিডিং হিস্ট্রি নিবো; পিরিয়ড, গাম ব্লিডিং, মেলেনা যেন মিস না হয়।

৭. জ্বর কমলেই সাথে সাথে রোগীকে অপারেশনের টেবিলে তুলবো না। আগে ডেঙ্গু এক্সক্লুড করে নিবো। যদি ডেংগু রোগীর ইমারজেন্সি অপারেশন লাগেই, অবশ্যই গাইডলাইন ফলো করবো অথবা অভিজ্ঞ মেডিসিন বিশেষজ্ঞকে টিমে রাখবো।

৮. জ্বর থাকা অবস্থায়, শুধু NS1 পজিটিভ দেখেই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে নিরুৎসাহিত করবো, যদি না কোন ইমারজেন্সী ইন্ডিকেশন থাকে। প্রতিদিন সিবিসি করতে দিবো। প্রচুর ফ্লুইড (শুধু পানি খাওয়া যাবেনা) খেতে উৎসাহিত করবো।

৯. জ্বর কমে গেলে বা সিবিসি তে বিপদজনক পরিবর্তন হলেই হাসপাতালে ভর্তি হতে বলবো। জ্বর কমার পর ৪৮-৭২ ঘন্টা রোগীকে রিলিজ দেয়া থেকে বিরত থাকবো।

১০. গাইডলাইন অনুযায়ী ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট দিতে না পারলে, ফ্লুইড ওভারলোড করে রোগী মৃতপ্রায় অবস্থায় আইসিইউ তে রেফার না করে বরং তার আগেই কোন সরকারি হাসপাতালে রেফার করবো, যেন রোগীটা সেখানে ফ্লোরে থেকে হলেও ডেঙ্গুর সঠিক চিকিৎসা নিতে পারে।