শিশুর চাহিদা অনুযায়ী ৬ মাস পর্যন্ত শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়াতে হয়। শিশুর ৬ মাস বয়সের পর বুকের দুধের পাশাপাশি বাখাবারের প্রয়োজন। কারণ বাড়ন্ত শিশুর পুষ্টি, শারিরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য ৫ মাস বয়সের পর সুষম খাদ্য উপাদান বিশিষ্ট খাবারের প্রয়োজন হয়। মায়ের দুধ সে প্রয়োজন মিটাতে যথেষ্ট নয়। তাই বুকের দুধের পাশাপাশি শিশুকে বাড়তি খাবার দেয়া দরকার। শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য ৬ মাস বয়স থেকে মায়ের দুধের পাশাপাশি শিশুকে পরিবারের যে খাবার দেয়া হয় তাকেই পরিপূরক বা বাড়তি খাবার বলে। আসুন জেনে নেই শূন্য থেকে ১ বছর পর্যন্ত শিশুর খাবার ব্যবস্থাপনা কিভাবে করা দরকার।

শূন্য থেকে ১ বছর পর্যন্ত শিশুর খাবার ব্যবস্থাপনা

শূন্য থেকে ছয় মাস ঃ শিশুর চাহিদা অনুযায়ী শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।

·        এ সময় কোন পানি বা পানীয় খাওয়ানোর প্রয়োজন।

·        মধু বা ফলের রস খাওয়ানোর প্রয়োজন নেই।

·        কোন পেকেটজাত খাবার বা বোতল দুধ খাওয়ানোর প্রয়োজন নেই।

ছয় মাস বয়স  ঃ বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে এবং বাড়তি কিছু খাবার (দিনে ৩ থেকে ৪ বার) খাওয়াতে হবে। বাড়তি খাবারের তালিকায় থাকবে-

·        চালের গুড়ার সুজি বা গলানো/মাখানো ভাত দিনে দুইবার।

·        গলানো বা মাখানো ফল যেমনঃ কলা,পেঁপে,আম দিনে একবার।

·        রান্না করা আলু,গাজর,কুমড়া দিনে একবার (ঝাল কম দিয়ে রান্না করতে হবে)।

·        দিনে ৩ থেকে ৪ বার খাবার খাওয়াতে হবে।

ছয় থেকে নয় মাস ঃ বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে,অন্যান্য খাবার খাওয়ানো বাড়িয়ে দিতে হবে। বাড়তি খাবারের তালিকায় থাকবে-

·        সবজি খিচুড় (চাল + ডাল + সবজি) বা সিদ্ধ আলু দিনে দুবার

·        আট মাস বয়স হলে গমের(আটা,ময়দা,সুজি) তৈরি খাবার খাওয়াতে হবে (দিনে দুই বার)

·        ঘন ডাল ২–৩ চামচ

·        গলানো বা মাখানো ফল যেমনঃ কলা,পেঁপে,আম দিনে একবার

·        রান্না করা শাক সবজি দিনে দুইবার (ঝাল কম দিয়ে রান্না করতে হবে)

·        দিনে ৪ থেকে ৫ বার খাবার খাওয়াতে হবে।

নয় মাস থেকে এক বছর ঃ বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে,এসময় বাচ্চাকে পারিবারিক খাবার খাওয়ানো শুরু করতে হবে। খাবারের তালিকায় থাকবে-

·        ভাত /সুজি /খিচুড়ি দিনে তিন বার।

·        ঘন ডাল দিনে দুইবার।

·        গলানো বা মাখানো ফল যেমনঃ কলা,পেঁপে,আম দিনে দুইবার।

·        রান্না করা শাক সবজি দিনে দুইবার ( ঝাল কম দিয়ে রান্না করতে হবে)

·        কলিজা,মাছ,মাংস এবং ডিম বাচ্চার চাহিদা অনুযায়ী খাওয়াতে হবে।

·        দিনে ৫ থেকে ৬ বার খাবার খাওয়াতে হবে।ছয় মাসের পর শিশুকে পরিমাণ মত আমিষ যুক্ত খাবার খাওয়াতে হবে কারণ আমিষ শিশুর শারীরিক গঠনে অনেক কার্যকরী উপাদান। উপযুক্ত পরিপূরক বা বাড়তি খাবার যদি বেশি দেরী করে শুরু করা হয় তাহলে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। শিশু পুষ্টিহীণতায় ভোগে, যার ফলে বাকি জীবনের উপর নানা রকম প্রভাব ফেলে। ফলে বিভিন্ন অপুষ্টিজনিত উপসর্গ দেখা দেয়।